ভালোবাসা দিবসকে সামনে রেখে আমাদের এ আয়োজন। দেশে–বিদেশে তারকারা কে কীভাবে প্রেম নিবেদন করেিছলেন? কী করে প্রেম থেকে সংসার...

8:17 PM
মাশরাফি-সুমনা
বিয়ের দিনে মাশরাফি বিন মুর্তজা ও স্ত্রী সুমনা হকনড়াইলের মেয়ে ও নড়াইলের ছেলে। ছোটবেলা থেকে জানাশোনা। তবে মন দেওয়া-নেওয়া হলো কলেজে পড়ার সময়। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের (ওয়ানডে) অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার সঙ্গে সুমনা হকের সেই প্রেম পরিণতি পায় ২০০৬ সালে। কে প্রথম প্রেম নিবেদন করেছিলেন, সেটি অবশ্য রহস্যের মধ্যেই রাখতে চেয়েছেন মাশরাফি। কিছু কথা থাক না গোপন!
সাকিব-শিশিরসাকিব-শিশিরবলা যায় ক্রিকেটটা সাকিবের সঙ্গেই চেনা শুরু করেছেন শিশির। এর আগে ক্রিকেটে তাঁর খুব একটা আগ্রহ ছিল বলে শোনা যায়নি কখনো। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের দলনেতা বলে কথা! ২০১১ সালে তাই ছিলেন সাকিব। হয়তো সে আগ্রহ থেকেই সাকিব আল হাসানকে ফেসবুকে বন্ধু হওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন শিশির। কতজনই তো তাঁকে সে আমন্ত্রণ জানিয়েছে! সাকিব ভেবেছিলেন হয়তো এটা কোনো ফেক অ্যাকাউন্ট। তবুও কৌতূহলবশত খুলে দেখে আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন। এরপর চলতে থাকে চ্যাটিং। ভাবের আদান-প্রদান। হয়তো মন দেওয়া-নেওয়াও। লন্ডনে তাঁদের প্রথম দেখা। সাকিব কাউন্টি খেলতে গিয়েছিলেন, শিশির এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে।সাকিবে শিশিরই প্রথম আগ্রহ দেখিয়েছিলেন, তবে আয়োজন করে কেউই প্রস্তাব দেননি কখনো।
সাইফ-কারিনাসাইফ-কারিনা‘সাইফিনা’র প্রেমোপাখ্যান বেশ দীর্ঘ। সাইফ আলী খানকে আগে থেকেই চিনতেন কারিনা। তখনো তাঁরা আত্মার আত্মীয় হননি বটে, তবে পারিবারিক সম্পর্কের আত্মীয় তো ছিলেন। প্রেমের শুরুটা ২০০৭ সালে এসে। তাশান সিনেমার শুটিংয়ে লাদাখ গিয়েছিলেন একসঙ্গে। শাহীদ কাপুরের সঙ্গে কারিনার সবে বিচ্ছেদ হয়েছে তখন। শুটিংয়ের অবসরে একদিন সুইমিংপুলে বসে সময় কাটাচ্ছিলেন সাইফ। কারিনাই এগিয়ে যান। কথা বলেন, বন্ধু হন। এরপর অবশ্য দুজনে মিলেই বন্ধুত্বটাকে আরেক ধাপ এগিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। দীর্ঘদিন চুটিয়ে প্রেম করার পর একদিন কারিনার মায়ের সঙ্গে দেখা করে সাইফ তাঁদের প্রেমের কথা অকপটে স্বীকার করেন, বিয়ের প্রস্তাব দেন। ২০১২ সালে তাঁদের বিয়ে হয়।
শাহরুখ-গৌরী
শাহরুখ-গৌরীপর্দায় হাজারো তরুণীর হৃদয় কাঁপালেও পর্দার পেছনে শাহরুখ খান কিন্তু একজনেরই। তাঁর নাম গৌরী খান। শাহরুখের অভিনয়ে আসার আগেই তাঁদের বিয়ে হয়। প্রথম পরিচয়ের সময়টাতে শাহরুখের বয়স সবে ১৮। এক অনুষ্ঠানে প্রথম গৌরীকে দেখেন তিনি। প্রথম দেখায় প্রেম? এরপর প্রায়ই তাঁরা একসঙ্গে সময় কাটাতে শুরু করেন। তবে শাহরুখের অতিরিক্ত লাজুকে স্বভাব গৌরীর পছন্দের ছিল না। কিছুটা বিরতির জন্যই হবে হয়তো, একদিন শাহরুখকে না জানিয়েই মুম্বাই চলে আসেন গৌরী। শাহরুখের অবস্থা তো বেহাল! গৌরীর খোঁজে মুম্বাই চলে আসেন শাহরুখও। যখন খুঁজে পেলেন, জড়িয়ে ধরে তাঁদের সে কী কান্না! বুঝতে পেরেছিলেন, আলাদা থাকার জন্য জন্মেননি তাঁরা। কে আগে প্রস্তাব দিয়েছিলেন? লাজুক স্বভাবের হলেও শাহরুখ নিজেই দিয়েছিলেন। সে সময় প্রতিদিন গৌরীকে বাসায় পৌঁছে দিতেন শাহরুখ। এমনই এক সন্ধ্যায় গৌরীকে প্রস্তাব দেন। তবে উত্তরের অপেক্ষায় না থেকে দুরুদুরু বুকে গাড়ি নিয়ে দে ছুট। এরপর? গৌরী নিশ্চয় ‘না’ বলেননি!
অভিষেক-ঐশ্বরিয়া
অভিষেক-ঐশ্বরিয়াজুনিয়র বচ্চনের গল্পটা একটু ভিন্ন। ঐশ্বরিয়া রাইয়ের সঙ্গে গোটা দুয়েক ছবিতে অভিনয়ের পর একদিন বুঝতে পারলেন, দুনিয়ার সবচেয়ে সুন্দর মেয়েটার প্রেমে পড়েছেন তিনি। তবে মনের কথা জানাবেন কীভাবে! তাঁর ‘বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না’ অবস্থা। অভিনয়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে গিয়েছিলেন, সাধারণত এক হোটেলেই ওঠেন সব সময়। একা থাকার সময়গুলোতে হোটেলের বেলকনিতে বসে প্রায়ই ভাবতেন ‘অ্যাশ’-এর কথা। মজার ব্যাপার, সেই একই বেলকনিতে ঐশ্বরিয়া রাইকে মনের কথা বলেছিলেন অভিষেক বচ্চন। ঐশ্বরিয়াও না করতে পারেননি। সে সময়টাতে গুরু সিনেমার শুটিংয়ে তাঁরা নিউইয়র্ক ছিলেন।
জনি ডেপ-অ্যাম্বার হার্ড
জনি ডেপ-অ্যাম্বার হার্ডঅদ্ভুত সব চরিত্রে নিখুঁত মানিয়ে যান তিনি। সবকিছু করেন পরিকল্পনামাফিক। একচুল এদিক-ওদিক হতে দেন না। সে জনি ডেপের গল্পটা কেমন অগোছালো। অ্যাম্বার হার্ডকে বিয়ের প্রস্তাবটা তিনিই আগে দিয়েছিলেন। এটা নিয়ে রাখঢাক বা নাটুকে কিছু জানাতে রাজি হননি ডেপ। শুধু জানান, ‘আমি সরাসরি বিয়ের আংটি নিয়ে হাজির হয়েছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য, এটি ছিল তার অাঙুলের তুলনায় অনেক বড়।’ পছন্দের মানুষটির আঙুলের মাপ জানা ছিল না তাঁর? আগে থেকে সবকিছু জানতেই হবে এমনটা মানতে নারাজ ডেপ। কিন্তু সে আংটির কী হলো? আংটিটার চেয়ে নাকি তাঁর হৃদয়টা বড়! তাই সে যাত্রায় ওই আংটি দিয়েই কাজ চালিয়েছিলেন।
ব্র্যাড পিট-অ্যাঞ্জেলিনা জোলিব্র্যাড পিট-অ্যাঞ্জেলিনা জোলি‘তুমি কি প্রস্তুত? তবে শুরু করা যাক!’ অ্যাঞ্জেলিনা জোলিকে বলেছিলেন ব্র্যাড পিট। সামনে তাঁদের ছয় সন্তান। জোলিকে ব্র্যাড জানিয়েছিলেন, চমৎকার এক উপহার দেবেন তিনি। অবশেষে ঝোলা থেকে বের করলেন ছোট্ট এক বাক্স। সেটা খুলতেই জোলির খুশির ঝিলিকটাই ছিল বেশি। এভাবেই বিয়ের প্রস্তাবটা দিয়েছিলেন ব্র্যাড পিট। সে তো খুব আগের ঘটনা নয়। তাঁদের প্রথম কাছে আসা মি. অ্যান্ড মিসেস স্মিথ ছবির সেটে, ২০০৩ সালে। পিটের স্ত্রী তখন জেনিফার অ্যানিস্টন। বিচ্ছেদের পর জোলি একা।
অবশ্য সে সময় তাঁরা ছিলেন শুধুই বন্ধু। একে অপরের সঙ্গে অনেক সময় কাটান। একে অপরকে বোঝেন, অন্তত শুরু করেন। এরপর কয়েক বছর পেরিয়ে যায়। পিটের বিচ্ছেদের খবর সংবাদমাধ্যমে আলোড়ন তোলে। আবার তাঁরা একা হয়ে যান। জোলি দত্তক নিয়েছিলেন ছয় সন্তানকে। ম্যাডক্স তাঁদেরই একজন। কোনো একদিন ভুল করে পিটকে ‘বাবা’ বলে ডেকে বসে সে। জোলি-পিট দুজনই সেখানে উপস্থিত ছিলেন, ম্যাডক্সের সে ডাক শুনে চোখাচোখি হলো দুজনের। কিন্তু কেউ কিছু বলেননি। জোলির মতে, সেটাই ছিল তাঁদের প্রেমে পড়ার প্রথম মুহূর্ত।
আমির খান-কিরণ রাও
আমির খান-কিরণ রাওলাগান সিনেমার পুরো দলবল নিয়ে একই বাসে ছিলেন তাঁরা। সেটাই কিরণ রাও ও আমির খানের প্রথম সামনাসামনি দেখা। আমির তখন সুপারস্টার আর কিরণ ছবির পরিচালকের সহকারী। এক সাক্ষাৎকারে কিরণ বলেন, ‘আমি জানতামই না একই বাসে আছি আমরা। আমির নিজেই সবার কাছে এসে পরিচয় দিচ্ছিল। প্রথম দেখায় তাঁকে একদমই “ফিল্মি” মানুষ মনে হয়নি। বরং মাটির মানুষ মনে হয়েছে।’ মজার ব্যাপার হলো, লাগান-এর ভুবনের কানে যে দুল পরা ছিল তা কিরণের কাছ থেকেই ধার করে চালিয়ে দেন আমির। অনেক দিন পরে সে কথা মনে পড়ে আমিরের। নতুন এক জোড়া কিনে দেন তিনি।
এদিকে আগের স্ত্রী রিনার সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় আমিরের। একদম ভেঙে পড়েন তিনি। সে সময়টাতে কাছে ছিলেন কিরণ। আমির নিজেই প্রথম প্রস্তাব দিয়েছিলেন কিরণ রাওকে। এর বেশি কিছু অবশ্য জানাননি আমির।


Writter : MD.Tanzimul Islam

Share this

Related Posts

Previous
Next Post »

Popular Posts